LifeSpring Limited - 4 years ago - 986 Views - LifeSpring Limited
রঙিন স্বপ্নের সুতো গেঁথে তোমার আর আমার এক হয়ে পথ চলার শুরু.. বিয়ের মঞ্চে হাতে হাত ধরে সবাইকে সাক্ষী রেখে জানিয়েছিলাম সারাজীবন পাশে থাকবো! অ্যালবামে বেঁধে রাখা ছবির স্মৃতিগুলো যেন আমাদের কাব্য হয়ে জ্বলজ্বল করছে! বিয়ের এক মাস দুমাস এমন করে প্রথম কিছুদিন হানিমুনের মত মনে হচ্ছিলো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কেমন যেন নিস্তব্ধা ভর করছে আমাদের উপর। মলিন হতে শুরু করেছে আমাদের "কাব্যগাঁথা"!
তুমি আমি সেই একই মানুষই আছি কিন্তু কোথাও কি এই সম্পর্কের ছন্দপতন হয়ে যাচ্ছে? আমি তোমাকে বুঝতে পারছি না নাকি তুমি আমাকে? কারণে অকারণে প্রায় প্রায় ঝগড়া করছি! সকল বদ্ধ শিকলকে ছিন্ন করে আমাদের মন একে অন্যের কাছে ছুটে চলছে শুধুমাত্র একটু স্বস্তির খোঁজে কিন্তু বারবারই চিরচেনা সেই হতাশার পুনরাবৃত্তি, সেই একই মান অভিমানের সুর! আশা হারিয়ে কখনো কখনো চুপ করে বসে থাকা! থমকে আছে আমাদের ভালোবাসা! মরিচা ধরা অনুভূতিগুলো এখনো অপেক্ষায় আছে আবার নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার আশায়!
এমনই কিছু ঘটনা আমাদের সাথে কিংবা আমাদের চারপাশের মানুষের সাথে প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে তাইনা? "লোনলি ম্যারিজ"- বিষয়টার সাথে আমরা আসলে কতটুকু পরিচিত? একই ছাদের নিচে বসবাস করা দুটি সত্তা শুধুমাত্র দায়বদ্ধতার খাতিরেই সংসার পার করে দিচ্ছে বছরের পর বছর! এবং আমরা সেটাকে মেনেও নিয়েছি সমাজের বেঁধে দেওয়া "এমনটাই স্বাভাবিক" এর অন্তর্ভুক্ত করে! বিয়ের পর সংসার হবে, নানারকম দায়িত্ব থাকবে, বাচ্চাকাচ্চাদের লালন করা এইতো এতটুকুই! কিন্তু সমাজ কি বলে দিয়েছে যে দুজন মানুষ দিয়েই এতকিছুর শুরু হয়েছিল তাদের কি হবে?? নাহ! সে কথা কেউ ভুলেও বলেনি! "দায়িত্ব" নামক শব্দটার অজুহাতে হিসাবের গড়মিল হচ্ছে নিজেদের সকল "আবেগ" এর!
সম্পর্ক তখনই খারাপ হতে শুরু করে যখন আমরা একে অন্যের "কম্প্রোমাইজ" থেকে নিজেদের "স্যাক্রিফাইস" বেশি দেখা শুরু করি। মনে হতে থাকে সবতো আমিই করছি এবং অপর ব্যক্তির কোন ভূমিকাই নেয়! আমরা কেউই আসলে শতভাগ সঠিক হই না। ভুল ত্রুটি মেনে নিয়ে দুজন মানুষ যখন একসাথে এগিয়ে চলে তখনই সম্পর্ক "পূর্ণতা" পায়। ক্ষমা করা মানে ছোট হওয়া নয় বরং সেটা ভালোবাসার জায়গাকে আরো প্রসারিত করে!
১) নিজেদের মধ্যে কথা বলা ছাড়বেন না। যত মান অভিমান থাকুক না কেন কথা বলেই মিটিয়ে ফেলুন। কখনো সেটা জমতে দেয়া যাবে না কারণ তাতে দূরত্ব শুধু বাড়তেই থাকে।
২) একে অন্যের "সাপোর্ট" হয়ে কাজ করুন। জীবনসঙ্গীর কোন কাজে ঘাটতি থাকলে আপনি সেটা পূরণ করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন এই সম্পর্কে যেকোন ভালো কিছুর ইনভেস্টমেন্টই লাভজনক সেটা যার পক্ষ থেকেই আসুক না কেন! কারণ দিনশেষে সেটা আপনাদের সম্পর্ককেই সুফল বয়ে এনে দেবে।
৩) মাসে একটা দিন রাখুন শুধুমাত্র "নিজেদের" জন্য এবং সকল দায়িত্বকে এইদিন ছুটি দিয়ে বেরিয়ে পড়ুন লং ড্রাইভে! ভাবলেশহীন হয়ে ঘুরুন শহরের এপাশ থেকে ওপাশ! ডেটিং করুন, জমিয়ে আড্ডা দিন, স্মৃতির সুতো ধরে মনে করুন নিজেদের ভালো সময়গুলোকে!
৪) আমরা অনেক সময় যে ভুলটি ভেবে থাকি তা হলো সংসারের দায়িত্ব পালন করলেই ভালোবাসার দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। দিনশেষে "আমি তোমাকে ভালোবাসি" এই কথাটাও ঘর সামলানো বা আয় রোজগারের মত সমকাতারেই ভূমিকা রাখে!
৫) কোনকিছু মনমত না হলে বুঝিয়ে বলুন। ধৈর্য্য রাখুন এবং বিষয়টি সহজ করতে কাজ করুন। ঝগড়াঝাটি আর কটু কথা কখনোই সমাধান হতে পারে না, তা শুধু নিজেদের দূরত্বকেই বাড়ায়!
সবশেষে মনে রাখবেন আপনার হাসিমুখ আপনার জীবনসঙ্গীর জন্য অনেক বেশি "ইনফ্লুয়েন্সিয়াল"...সংসার তখনই প্রাণবন্ত হয় যখন আমাদের অনুভূতিগুলোর নিয়মিত চর্চা হয়! এতদিন এগুলো অবহেলায় ছিল বা ঠিক হয়নি বলে তা আর কখনোই স্বাভাবিক হবে না এটা মনে করা যাবে না। প্রতিটা দিন একটা নতুন সূচনা আর প্রতিদিনকার ছোট ছোট সুন্দর গল্পগুলোই জীবনকে পরিপূর্ণ করে। তাই সময় নিন! চেষ্টা করুন! কারণ পরিচর্যাই "প্রশান্তিকে" আহবান করবে!
Copyright © 2023 | All rights reserved by LifeSpring Limited | Developed by Legend It Institute